পাঁচ শতাধিক বিদেশগামী কর্মীর বহির্গমন ছাড়পত্রে জটিলতা
মনির
হোসেন
বিদেশগামী পাঁচ শতাধিক
নারী-পুরুষ কর্মীর
বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদানে জটিলতা
সৃষ্টি হয়েছে। এসব
শ্রমিকের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও
প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে ফাইল
আটকে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগী শ্রমিকেরা বলছেন,
আগামী দু-এক
দিনের মধ্যে এর
সুরাহা না হলে
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও
প্রশিক্ষণ ব্যুরো কার্যালয় ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা করছেন
তারা। গত রাতে
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও
প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (বহির্গমন) আব্দুল
লতিফ খানের সাথে
যোগাযোগ করা হলে
তিনি বলেন, বহির্গমন ছাড়পত্র ব্যুরো
থেকে বন্ধ করা
হয়নি। শুধু যেসব
এজেন্সির গ্রুপ ডিমান্ড এসেছে
সেগুলোর বহির্গমন ছাড়পত্র প্রদানে একটু
কড়াকড়ির সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে। তিনি বলেন,
গ্রুপ ডিমান্ডে এজেন্সিগুলো নিজেদের মতো
করে কর্মী বাছাই
করেছে। তারা কত
টাকা নিচ্ছে তাতো
আর জানতে পারছি
না। মূলত মাইগ্রেশন কস্ট
নিয়ন্ত্রণের জন্যই বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়া
হচ্ছে না। তবে
এরও একটি সমাধান
আছে জানিয়ে তিনি
বলেন, যাদের গ্রুপ
ডিমান্ডে ১০০-এর
বেশি কর্মী রয়েছে
সেগুলো প্রবাসীকল্যাণ ও
বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে
অনুমতি নিতে হবে।
এর মধ্যে সুপার
ইস্টার্নের মহিলা কর্মীর
সংখ্যা ১৩৬ জন।
জানা গেছে, গত
এপ্রিল মাসে মরিশাস
থেকে বিভিন্ন গার্মেন্টের নারী-পুরুষ মিলিয়ে সাত-আটটি রিক্রুটিং এজেন্সির নামে
পাঁচ শতাধিক কর্মীর
চাহিদাপত্র আসে। নিয়ম
মোতাবেক এসব এজেন্সি ডেলিগেট ইন্টারভিউ সম্পন্ন করে।
এর আগে মেডিক্যাল করানো
হয়। কর্মীদের বিদেশ
গমনে সব প্রস্তুতি সম্পন্নের পর
গত সপ্তাহে সুপার
ইস্টার্ন, আল সৌরভ,
গোলাম রাব্বী, আল
কাদিরসহ বেশ কিছু
রিক্রুটিং এজেন্সি বহির্গমন ছাড়পত্র নেয়ার
জন্য জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরোতে আবেদন
করে। একই সাথে
মালদ্বীপ ও সৌদি
আরবের জন্যও বেশ
কিছু এজেন্সি গ্রুপ
ভিসার ছাড়পত্র পেতে
আবেদন করে। কিন্তু
প্রতিটি এজেন্সির দাখিল
করা কর্মীকে বহির্গমন ছাড়পত্র না
দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে বলে জানানো
হয়। অথচ এসব
কর্মীর নির্দিষ্ট সময়ে
বিদেশ পাঠাতে ব্যর্থ
হলে বড় ধরনের
আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে
হবে বলে ভুক্তভোগী সূত্রে
জানা গেছে। গতকাল
মরিশাসে শ্রমিক রফতানিকারক একটি
রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক
নাম না প্রকাশের শর্তে
এ প্রতিবেদককে বলেন,
মরিশাসে শ্রমিক পাঠানোর জন্য
সরকারের যা যা
নিয়ম রয়েছে তার
সব কিছু মেনেই
ব্যুরোর বহির্গমন শাখায়
ছাড়পত্রের জন্য আবেদন
করা হয়েছে। কিন্তু
বহির্গমন পরিচালক আমাদের
বলছেন, এসব কর্মীর
নামে বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়া
যাবে না। কারণ
জানতে চাইলে তিনি
বলেছেন, এটা মন্ত্রীর নির্দেশ। অথচ
এসব কর্মীর নামে
ডিমান্ড লেটারের পারমিশন এজেন্সিগুলোর আগেই
নেয়া আছে। এক
প্রশ্নের উত্তরে তিনি
বলেন, আমাদের গ্রুপ
ডিমান্ড এসেছে গত
এপ্রিল মাসে। তখনই
ডেলিগেট এসে কর্মী
বাছাই করে চলে
গেছেন। আর মে
মাসে জনশক্তি কর্মসংস্থান ব্যুরো
থেকে নির্দেশনা আসে
কর্মী বাছাইয়ের সময়
সরকারি একজন প্রতিনিধি উপস্থিত রাখতে
হবে। তিনি আরো
বলেন, যেসব কর্মীকে পাঠানো
হচ্ছে তাদের সবার
নাম ব্যুরোর ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা
আছে। তার পরও
অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ
করে বলেন, নির্ধারিত সময়ে
শ্রমিকেরা না যেতে
পারলে শুধু আর্থিক
ক্ষতিই হবে না,
মরিশাসের সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার আমাদের
হারানোরও আশঙ্কা রয়েছে। এ
প্রসঙ্গে পরিচালক (বহির্গমন) আব্দুল
লতিফ খান বলেন,
সিলেকশন প্রক্রিয়া নিয়ে
কিছুটা জটিলতা থাকায়
বহির্গমনে কড়াকড়ি করার
ওপর থেকে সিদ্ধান্ত এসেছে।
তার মতে, অনেকেই
অভিবাসন ব্যয় বেশি
নিচ্ছে। টাকা যাতে
বেশি নিতে না
পারে সে জন্য
কর্মী সিলেকশন করার
সময় প্রতিনিধি রাখার
নির্দেশনা দেয়া হয়েছে
এজেন্সিগুলোকে।
এক প্রশ্নের উত্তরে
তিনি বলেন, মালদ্বীপ ও
সৌদি আরব যেতে
এখন পর্যন্ত বহির্গমন প্রদানে কোনো
সমস্যা হয়নি। তবে
গ্রুপ ভিসার ক্ষেত্রে কিছুটা
কড়াকড়ি রয়েছে। এ
দিকে ভুক্তভোগী একাধিক
কর্মী বহির্গমন ছাড়পত্র না
পাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে এ
প্রতিবেদককে বলেছেন, মরিশাস
থেকে কোম্পানি মালিক
এজেন্সিকে জানিয়েছে, যথাসময়ে না
আসতে পারলে ভিসা
বাতিল করে অন্য
দেশ থেকে কর্মী
নেবে তারা। তাই
দু-এক দিনের
মধ্যে এর সুরাহা
না হলে আমরা
ব্যুরো অফিস ঘেরাও
করতে বাধ্য হবো।
No comments :
Post a Comment